মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য কাট মার্ক সবসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই কাট মার্ক নির্ধারণ করে একজন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাবে কি না। চলতি বছর ২০২৫ সালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে প্রায় এক লক্ষ ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী। সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা মাত্র ৫,৩৮০টি হওয়ায় প্রতিটি আসনের বিপরীতে প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতা করেছে। এ কারণে কাট মার্ক নিয়ে আলোচনা শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের মাঝে বেশ জোরেশোরে চলছে।
গত বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে কাট মার্ক ছিল ২৬৭। এটি ছিল ৩০০ নম্বরের পরীক্ষায় নির্ধারিত স্কোর। এমসিকিউ অংশের ১০০ নম্বরের ক্ষেত্রে কাট মার্ক ছিল ৬৭। এই বছরও কাট মার্ক নির্ধারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে শিক্ষার্থীরা এবং সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কাট মার্ক কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কত নাম্বার পেলে চান্স পাওয়া যাবে
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তুলনামূলকভাবে সহজ হয়েছে। বেশিরভাগ বিষয়ে উত্তর করতে তারা কোনো বড় অসুবিধার সম্মুখীন হয়নি। তবে রসায়ন, পদার্থবিদ্যা এবং কিছু ইংরেজি অংশের প্রশ্ন একটু জটিল ছিল। এই অংশগুলো ছাড়া বাকি বিষয়গুলোর প্রশ্ন তুলনামূলকভাবে সহজ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভালো স্কোর করার আশা করছে।
শিক্ষার্থীরা বলছে, সহজ প্রশ্নপত্রের কারণে পরীক্ষার গড় নম্বর বেড়ে যাবে। তাই কাট মার্কও বেড়ে যেতে পারে। যারা পরীক্ষায় ভালো করেছে, তারা মনে করছে ৭১-৭২ নম্বরের বেশি পেলে সরকারি মেডিকেল কলেজে সরাসরি ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া সম্ভব। অন্যদিকে, ৬৮-৭০ নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষমাণ তালিকায় সুযোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
কাট মার্ক কীভাবে নির্ধারিত হয়
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার কাট মার্ক নির্ধারণ হয় কয়েকটি বিষয়ে ভিত্তি করে। প্রথমত, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা। দ্বিতীয়ত, প্রশ্নপত্রের মান। তৃতীয়ত, সরকারি মেডিকেল কলেজের আসন সংখ্যা। এই বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা অনেক বেশি। এছাড়া শিক্ষার্থীরা সহজ প্রশ্নপত্রের কারণে ভালো পারফরম্যান্স করেছে বলে জানা গেছে। তাই কাট মার্ক কিছুটা বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পূর্ববর্তী বছরগুলোতে এমসিকিউ পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৬৭ ছিল কাট মার্ক। এই বছর কাট মার্ক বেড়ে ৭১ থেকে ৭২ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি কারো স্কোর ৭১-এর বেশি হয়, তাহলে তারা সরাসরি ভর্তি হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। আর যারা ৬৮ থেকে ৭০ নম্বর পাবে, তাদের অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হতে পারে। তবে কাট মার্ক এবং ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট যেভাবে দেখা যাবে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে প্রকাশ করে। শিক্ষার্থীরা তাদের রেজাল্ট নিজের মোবাইল ফোন থেকে খুব সহজেই দেখতে পারে। রেজাল্ট দেখতে হলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। নিচে সহজ ভাষায় পুরো প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হলো:
১. শিক্ষার্থীকে প্রথমে https://result.dghs.gov.bd/mbbs ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
২. ওয়েবসাইটে গেলে সেখানে একটি রোল নম্বর টাইপ করার অপশন পাওয়া যাবে।
৩. শিক্ষার্থীরা তাদের রোল নম্বর লিখে সাবমিট বাটনে ক্লিক করবে।
৪. এরপর রেজাল্ট অপশন-এ ক্লিক করলে শিক্ষার্থীরা তাদের বিস্তারিত ফলাফল দেখতে পারবে।
এই প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং দ্রুত। শিক্ষার্থীরা তাদের রেজাল্ট বের করার জন্য বাড়তি কোনো ঝামেলায় পড়বে না। রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধারণ করা জরুরি। পরীক্ষার কাট মার্ক এবং ফলাফল নিয়ে উদ্বেগ না করে শান্ত থাকা উচিত। যেহেতু এবার বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ভালো পরীক্ষা দিয়েছে, তাই ভালো ফলাফল করার সম্ভাবনা বেশি। যদি কারো নাম সরাসরি মেধাতালিকায় না আসে, তবে অপেক্ষমাণ তালিকার জন্য প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন। অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সময় পরবর্তীতে সুযোগ তৈরি হয়।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার গুরুত্ব
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা শুধুমাত্র একটি পরীক্ষা নয়; এটি একজন শিক্ষার্থীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এখানে ভালো করতে পারলে একজন শিক্ষার্থী তার স্বপ্নের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। এ কারণে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া মানে কেবল ভালো শিক্ষার নিশ্চয়তা নয়, এটি ভবিষ্যতের পেশাগত জীবনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার কাট মার্ক এবং রেজাল্ট নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক আগ্রহ এবং উত্তেজনা কাজ করছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে যথাসময়ে রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে। শিক্ষার্থীদের উচিত ধৈর্য ধরে তাদের রেজাল্ট জানার অপেক্ষা করা। এবারের পরীক্ষার কাট মার্ক নিয়ে আলোচনা বেশি হলেও এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে ফলাফলের ওপর। আশা করা যায়, এবারের পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাবে। শিক্ষার্থীদের জন্য শুভকামনা! আপনি ভর্তি বিষয়ে আরও তথ্য জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের ভর্তি ক্যাটাগরি ঘুরে দেখুন।