বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক-কর্মচারীদের ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় অনেক শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্যে ভুল পাওয়া গেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানিয়েছে, ৬ এপ্রিলের মধ্যে তথ্য সংশোধন করতে হবে। না হলে বেতন বন্ধ হয়ে যাবে।
সরকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন দিচ্ছে। এই পদ্ধতিতে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরাসরি বেতন দেওয়া হয়। তবে এই প্রক্রিয়ায় অনেকের তথ্যে ভুল পাওয়া গেছে। মাউশি জানিয়েছে, ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য ঠিক আছে। কিন্তু বাকি প্রায় দুই লাখের তথ্য সংশোধন করতে হবে।
ইএফটিতে বেতন তথ্য সংশোধনের নোটিশ ২০২৫
মাউশির উপ-পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মোঃ শাহজাহান বলেন, “৬ এপ্রিলের মধ্যে তথ্য সংশোধন করতে হবে। না হলে বেতন বন্ধ হয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “যতদিন তথ্য সংশোধন না হবে, ততদিন বেতন বন্ধ থাকবে।”
মাউশি জানিয়েছে, নামের বানান এবং জন্ম তারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য একই হতে হবে। ডট, কমা, হাইফেনের মতো ছোটখাটো বিষয়গুলো প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে।
তথ্য সংশোধনের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ড্যাশবোর্ড উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। মোঃ শাহজাহান বলেন, “প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ড্যাশবোর্ডে এক্সেস দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ইএমআইএস সেল দেখছে।” তিনি আরও বলেন, “৬ এপ্রিলের মধ্যে অবশ্যই তথ্য সংশোধন করতে হবে।”
জানুয়ারি মাসের EFT বেতন
মাউশি মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান জানান, “জানুয়ারি মাসের বেতন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।” তিনি বলেন, “বাজেটে কোনো ঘাটতি নেই। তবে টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে বেতন ছাড়তে কিছু বিলম্ব হচ্ছে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, “চলতি সপ্তাহেই শিক্ষক-কর্মচারীরা জানুয়ারি মাসের বেতন পাবেন।”
ডিজি আরও বলেন, “বেতন না হওয়ায় শিক্ষকরা কষ্টে আছেন। তবে ভালো কিছু পেতে হলে কষ্ট স্বীকার করতে হবে।” তিনি বলেন, “এই অসুবিধা সাময়িক। প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি চালু হলে শিক্ষকরা মাসের শুরুতেই বেতন পাবেন।”
মাউশির সাধারণ প্রশাসন শাখার উপ-পরিচালক মোঃ শাহজাহান বলেন, “জানুয়ারি মাসের বেতন ছাড়ের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।” তিনি বলেন, “গতকাল বুধবার বেতন সংক্রান্ত তথ্য এজি অফিসে পাঠানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহে শিক্ষক-কর্মচারীরা জানুয়ারি মাসের বেতন পাবেন।”
বেতন বিলম্বের কারণে শিক্ষক-কর্মচারীরা বেশ চাপে রয়েছেন। অনেকেই বলছেন, “বেতন না পেলে পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।” তবে মাউশির আশ্বাসে তারা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। তারা আশা করছেন, “দ্রুত বেতন পেলে তাদের সমস্যার সমাধান হবে।”
ইএফটি পদ্ধতির সুবিধা
ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন দেওয়ার অনেক সুবিধা রয়েছে। এই পদ্ধতিতে বেতন দ্রুত এবং নিরাপদে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছায়। এতে করে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন উত্তোলনের জন্য বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয় না। তবে এই পদ্ধতিতে তথ্য সঠিক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যে ভুল থাকলে বেতন পেতে সমস্যা হয়।
মাউশি বারবার তথ্য সংশোধনের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। তারা বলছে, “তথ্য সঠিক না হলে বেতন বন্ধ হয়ে যাবে।” তাই শিক্ষক-কর্মচারীদের উচিত দ্রুত তথ্য সংশোধন করা। প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরও এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য পরামর্শ
শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে:
- নামের বানান এবং জন্ম তারিখ সঠিকভাবে লিখুন।
- মোবাইল নম্বর এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাই করুন।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য সঠিক কিনা তা নিশ্চিত করুন।
- প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে তথ্য সংশোধন করুন।
তথ্য সংশোধনের প্রক্রিয়া খুবই সহজ। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করে তথ্য সংশোধন করা যায়। এই প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা হলে মাউশির সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
মাউশি মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, “এই প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি চালু হলে শিক্ষকরা মাসের শুরুতেই বেতন পাবেন।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, “চলতি সপ্তাহেই শিক্ষক-কর্মচারীরা জানুয়ারি মাসের বেতন পাবেন।”
ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন প্রদান একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তবে এই পদ্ধতিতে তথ্য সঠিক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাউশি বারবার তথ্য সংশোধনের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের উচিত দ্রুত তথ্য সংশোধন করা। না হলে বেতন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আশা করা যায়, এই প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি চালু হলে শিক্ষক-কর্মচারীরা মাসের শুরুতেই বেতন পাবেন।