বন্ধুরা, এই লেখাতে আমি ভাবসম্প্রসারণ দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য লিখেছি আপনাদের জন্য। একজন মানুষ যতই জ্ঞানী বা পণ্ডিত হোন না কেন, যদি তাঁর চরিত্র ভালো না হয়, তবে সমাজে তাঁর জ্ঞানকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। কারণ, প্রকৃত জ্ঞান শুধু বই পড়া বা মুখস্থ করার বিষয় নয়। এটি চরিত্র এবং নৈতিকতার সঙ্গে মিশে গিয়ে জীবনে কাজে লাগানো উচিত। যিনি তাঁর জ্ঞানকে অন্যের উপকারে ব্যবহার না করে, বরং সমাজের ক্ষতি করার জন্য ব্যবহার করেন, তাঁর জ্ঞান কোনো কাজের নয়। এমন ব্যক্তির জ্ঞানকে সমাজে গ্রহণযোগ্য মনে করা যায় না।
জ্ঞান এবং চরিত্রের মধ্যে ভারসাম্য থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষ যদি জ্ঞানী হন কিন্তু তাঁর আচরণ খারাপ হয়, তবে তাঁর জ্ঞান সমাজে কোনো মূল্য রাখে না। অন্যদিকে, একজন সাধারণ মানুষও যদি সৎ চরিত্রের অধিকারী হন, তবে সমাজে তাঁর মূল্য অনেক বেশি। তাই, জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি চরিত্র গঠনের দিকেও নজর দেওয়া উচিত। জ্ঞান এবং চরিত্রের সমন্বয়ই একজন মানুষকে প্রকৃত অর্থে মহান করে তোলে। এই দুটি বিষয় একসাথে থাকলে তবেই জ্ঞানকে সঠিকভাবে সম্মান দেওয়া যায় এবং তা সমাজের কল্যাণে ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
ভাবসম্প্রসারণ দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য
মূলভাব
দুর্জন বা অসৎ চরিত্রের মানুষ যতই জ্ঞানী বা বিদ্বান হোক না কেন, তার বিদ্যা সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। এমন ব্যক্তিকে পরিত্যাগ করাই উত্তম।
সম্প্রসারিত ভাব
বিদ্যা বা জ্ঞান কেবলমাত্র মস্তিষ্কের খোরাক নয়; এর প্রকৃত মূল্য তখনই প্রকাশ পায়, যখন তা মানুষের চরিত্র ও আচরণে ফুটে ওঠে। একজন ব্যক্তি যদি প্রচুর জ্ঞান অর্জন করেন, কিন্তু সেই জ্ঞান দিয়ে সমাজের কোনো উপকার না করেন, তবে সেই বিদ্যা অর্থহীন।
একজন মানুষ যদি তার বিদ্যা দিয়ে অন্যদের ক্ষতি করতে চায়, অন্যায় বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, তবে তার জ্ঞান সমাজের জন্য ক্ষতিকর। এমন ব্যক্তির বিদ্যা কোনো নৈতিক বা মানবিক মূল্যবোধকে সমর্থন করে না। তিনি যতই জ্ঞানী হোন না কেন, যদি তার বিদ্যা মানুষের কল্যাণে না লাগে, তবে তা অপ্রয়োজনীয়।
উদাহরণস্বরূপ, একজন ডাক্তার যদি তার মেডিকেল জ্ঞান দিয়ে মানুষের চিকিৎসা না করে, বরং তাদের ক্ষতি করে, তবে তার জ্ঞান সমাজের জন্য বিপদজনক। একইভাবে, একজন আইনজীবী যদি তার আইনি জ্ঞান দিয়ে অন্যায়ভাবে কারো ক্ষতি করেন, তবে তার বিদ্যা কোনো কাজে আসে না।
দুর্জন বিদ্বানের বিদ্যা কখনোই সম্মান পায় না, কারণ তা অন্ধকারের উৎস হয়ে দাঁড়ায়। এমন ব্যক্তির বিদ্যা সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই, দুর্জন বিদ্বানকে পরিত্যাগ করাই শ্রেয়। বিদ্যা তখনই মূল্যবান, যখন তা মানবতার সেবায় ব্যবহৃত হয়।
মন্তব্য
এই ধারণা আমাদের শেখায় যে, প্রকৃত জ্ঞানী তিনি, যার বিদ্যা শুধু বইয়ের পাতায় নয়, বরং তার চরিত্র ও আচরণে প্রতিফলিত হয়। যে ব্যক্তি তার জ্ঞান অন্যদের উপকারের বদলে ক্ষতির জন্য ব্যবহার করেন, তার বিদ্যা কখনোই সম্মানের যোগ্য নয়। প্রকৃত বিদ্যা মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হওয়া উচিত। নইলে তা সমাজের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।
দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য ভাবসম্প্রসারণ উপসংহার
বিদ্যার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো মানবতার সেবা করা। দুর্জন বিদ্বানের বিদ্যা এই উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হয়। তাই, সমাজের কল্যাণের জন্য এমন ব্যক্তিকে পরিত্যাগ করাই উচিত। প্রকৃত জ্ঞানী তিনি, যিনি তার বিদ্যা দিয়ে মানুষের মঙ্গল সাধন করেন। আশাকরি বন্ধুরা এই দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য ভাবসম্প্রসারণ লেখাটি পড়ে আপনি এই ভাবসম্প্রসারণটি নোট করেছেন।